Tuesday, August 5, 2025

শহীদ তাহমিদের কবরের পাশে কালো জাদুর রহস্যময় জিনিস,এলাকা জুড়ে চানঞ্চল্য

আরও পড়ুন

কালো জাদু, ব্ল্যাক ম্যাজিক, কুফরি কালাম বা তাবিজ—এসব শব্দ শুনলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে যেকোনো মানুষ। কালো জাদু বলতে বোঝায় শয়তান বা অতিপ্রাকৃতিক কিছু সত্তার সন্তুষ্টির মাধ্যমে কারও অনিষ্ট করা, বিপদে ফেলা বা নিজের উদ্দেশ্য পূরণে নানা কাজ করা। অঞ্চলভেদে এই চর্চার বিভিন্ন নাম রয়েছে— যেমন ভুডু, তন্ত্র-মন্ত্র, কুফরি কালাম, বাণ মারা ইত্যাদি।

এমনই এক কালো জাদুর রহস্যময় কিছু অদ্ভুত জিনিস পাওয়া গেছে নরসিংদীতে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে গত ১৮ জুলাই নরসিংদী শহরের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জেলখানা মোড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রথম শহীদ হন তাহমিদ ভূঁইয়া তামিম (১৫) নামে এক শিক্ষার্থী। পরে তাকে সদর উপজেলার চিনিশপুর পূর্বপাড়া সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

তার স্মৃতি ধরে রাখতে কবর বাঁধানোর কাজ শুরু করে সরকার। আজ রবিবার (২৭ জুলাই) কবর বাঁধানোর জন্য শ্রমিকরা চিনিশপুর কবরস্থানে কাজ করতে যায়। সেখানে তাহমিদের কবরের চারপাশে ইটের গাঁথুনি দেওয়ার জন্য শ্রমিকরা মাটি খুঁড়তে থাকে।

আরও পড়ুনঃ  অন্য উপায়ে ক্ষমতা দখলের ফন্দি প্রতিরোধের মুখে পড়বে : আসিফ মাহমুদ

মাটি খোঁড়ার সময় তাহমিদের কবরের পায়ের পাশে শ্রমিকদের কুদালে কিছু একটা ঠেকে। কৌতূহলবশত তারা সেটি বের করে দেখতে পায় পলিথিন জাতীয় কিছু দিয়ে মোড়ানো একটি বস্তু। পরে সেটি খুলে দেখতে পায় এর ভেতরে রয়েছে একটি পুতুল, পিন (সুই সদৃশ) এবং একটি কাগজে কিছু লেখা ও ছবি আঁকা।

“তাসলিমার মেয়ে তানজিনার বিচ্ছেদ হোক তাহার প্রেমিক উজ্জলের সঙ্গে। এই দুজনের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ শুরু হোক। তানজিনা উজ্জলকে শত্রু মনে করুক। তানজিনা ও উজ্জলের মধ্যে তালাক হয়ে যাক।”

আরও পড়ুনঃ  বিএনপির ৫ নেতা বহিষ্কার

এরপর প্রচণ্ড বৃষ্টি শুরু হলে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে কবরস্থান ত্যাগ করে। তবে এই ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় সৃষ্টি হয় চরম আতঙ্ক।

এ ব্যাপারে আলতাফ মাহমুদ নামে একজন প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, “কালো জাদু বা ব্ল্যাক ম্যাজিক চর্চা চলে আসছে আদিকাল থেকেই। এই কাজে ব্যবহৃত হয় নানা বস্তু ও প্রাণী—যেমন পাখি, মাছ, ছাগল, পুতুল, মূর্তি ইত্যাদি। যার ওপর জাদু প্রয়োগ করা হয়, তার ব্যবহার্য বস্তু যেমন পোশাক, নখ, চুল ইত্যাদি সংগ্রহ করে এসব তাবিজ-কবচ তৈরি করা হয়। কখনো কাক, প্যাঁচা, ডাহুক জাতীয় পাখি বা মাছের শরীরের ভেতরে এসব ভরে কার্যসিদ্ধি করা হয়।”

আরও পড়ুনঃ  ইশ! মানুষ কত নিঃষ্পাপ, চাঁদাবাজির খবরে সবার অবাক হওয়া নিয়ে যা বললেন উমামা

তিনি আরও বলেন, “এ থেকে মুক্তি পেতে তাবিজ বা কবচ পুড়িয়ে ফেলা উচিত। লেখাযুক্ত কাগজ হলে পানিতে ভিজিয়ে মুছে ফেলা শ্রেয়। পাশাপাশি আমাদের সচেতন হতে হবে। চারপাশে তান্ত্রিক, কবিরাজ বা সন্দেহজনক আচরণকারীদের ওপর নজর রাখতে হবে এবং প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে হবে।”

এ বিষয়ে শহীদ তাহমিদের বাবা রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, “কবরের চারপাশে শ্রমিকরা যখন কাজ করছিল, তখন মাটির নিচ থেকে এই জিনিসগুলো পাওয়া যায়। ইসলামে কালো জাদু সম্পূর্ণ হারাম। যারা এটা করেছে, তারা অমানবিক ও জঘন্য কাজ করেছে। কবরস্থানকে ব্যবহার করে কুফরি বা জাদু-টুনা করা অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ। আমাদের সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।”

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ